মৎস্য পুরান অনুসারে বাস্তু পুরুষ কে, কি ভাবে তার সৃষ্টি ? কেন হিন্দু ধর্মে তার পুজো করা হয় ?

নমস্কার হিন্দুশাস্ত্রজ্ঞান পরিবারে আপনাকে স্বাগত জানাই ।
Know all about Vastu Purusha

আজ আপনি জানবেন মৎস্য পুরান অনুসারে বাস্তু পুরুষ সম্পর্কে । কে এই বাস্তু পুরুষ, কি ভাবে তার সৃষ্টি ? কেন হিন্দু ধর্মে তার পুজো করা হয় এবং কি ভাবে এই পূজোর প্রচলন হয় ? 
এই সমস্ত কিছু জানতে পোস্টটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন ।

অন্যান্য কিছু তথ্য :







বাস্তুশাস্ত্রে বাস্তুভূমির দেবতাকে বাস্তু পুরুষ বলা হয় । বাস্তুপুরুষ সমস্ত রকম স্থানেই বিরাজ করেন তা সে রাজবাড়িই হোক কি বিশাল অট্টালিকা কি মধ্যবিত্তদের থাকার ঘর বা গরিবের ঝুপড়ি । এমনকি মন্দির, দোকান সমস্ত রকম স্থানেই বাস্তুপুরুষ বর্তমান বলে উল্লেখিত মৎস্য পুরানে ।

বাস্তুদেবতার উৎপত্তি এবং তার পূজার্চনার ব্যাপারে একটি মজার ঘটনার উল্লেখ মেলে মৎস্য পুরানে ।

অনেকদিন আগে অন্ধক নামে এক অসুরের সাথে দেবাদিদেব মহাদেবের অনেক বছর ধরে যুদ্ধ হয় এবং অবশেষে মহাদেব শিব অসুরকে বধ করেন । দেবতা শিব যখন অসুরকে বধ করেন তখন তার শরীর নির্গত ঘাম থেকে এক মহাত্মার জন্ম হয় । যিনি অন্ধক অসুর এবং অন্ধক গণের সমস্ত রক্ত পান করেন । কিন্তু তবুও সেই মহাত্মার খুদা শান্ত না হওয়াতে, তিনি দেবাদিদেব মহাদেবের তপস্যা করেন । ভোলা মহেশ্বর তপস্যাতে তুষ্ট হয়ে বর প্রদান করেন আর সেই বর পেয়ে মহাত্মা ভূলোকে এসে সমস্ত প্রাণীদের খেতে শুরু করেন ।

মহাত্মার এই ভয়ঙ্কর রূপ দেখে দেবতা, দানব, রাক্ষস এবং সমস্ত প্রাণী আতঙ্কিত হয়ে পরম পিতা ব্রহ্মাকে স্মরণ করেন । ব্রহ্মদেব তখন মহাত্মাকে পেট পেতে উপুড় হওয়ার পরামর্শ দেন এবং ব্রহ্ম দেবের পরামর্শ মেনে মহাত্মা তাই করেন । ব্রহ্মদেবের পরামর্শ অনুযায়ী ৮১ জন দেবতা মহাত্মার পেটের ভেতর বিভিন্ন অংশে গিয়ে বসলেন ।

ব্রহ্মা মহাত্মার প্রার্থনায় অবিভূত হয়ে তাকে বর দিলেন যে - নতুন বাস ভবনের নির্মাণের আগে যদি কেউ তোমাকে বাস্তুদেবতা বলে মেনে পুজো করে এবং অন্নদান করে তাহলে তুমি তাকে সুখ সমৃদ্ধি দিয়ে ভরিয়ে তুলবে কিন্তু যদি কেউ তোমার পুজো না করে নতুন ঘরে বসবাস শুরু করে তবে তুমি তাকে ভক্ষণ করতে পারবে, এমনকি তাকে লাঞ্ছনাও দিতে পারবে ।

এই ধরণের অনেক বিবরণ প্রাচীন অনেক গ্রন্থেই পাওয়া যায় । কিন্তু মজার বিষয় হল এসবের সত্যতা বা প্রমান কোথাও পাওয়া যায় নি । সম্ভবত এই কথার সমাবেশ গ্রন্থে এই কারণেই দেওয়া হয়েছে যাতে জনসমাজে বাস্তুশাস্ত্রের বিধিনিষেধ প্রচলিত হয় ।

রামায়ণ মহাভারতের মতো মহাকাব্যেও বাস্তুশাস্ত্রের নির্দেশ পাওয়া যায়, যা বাস্তুশাস্ত্রের প্রাচীনত্ব কে প্রমান করে ।

আশাকরি এই পোস্টটি আপনার ভালো লেগেছে ।

হিন্দু ধর্মের ধর্ম গ্রন্থ থেকে নেওয়া নানা দেব দেবীর কাহিনীর সাথে, জ্যোতিষ, বাস্তু, যোগ এবং প্রাণায়াম সম্পর্কিত ভিডিও পেতে, হিন্দু শাস্ত্র জ্ঞান চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন ।



পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ । আপনার দিনটি শুভ হোক । 

Post a Comment

0 Comments